বর্তমান পৃথিবীকে বিদ্যুৎ ছাড়া কল্পনা করা প্রায় অসম্ভবই বলা যায়। আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই কোননা কোন ভাবে রয়েছে বিদ্যুতের ব্যবহার। বিদ্যুতের এই চাহিদার কথা বিবেচনায় রেখে বিজ্ঞানীরা প্রথম থেকেই চেষ্টায় ছিলেন কিভাবে অল্প খরচে পরিবেশের কম ক্ষতি করে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায় এরই ফলশ্রুতিতে সামনে আসে পারমাণবিক বিদ্যুৎ । যেখানে কয়লার মাধ্যমে 1 ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে CO2নিঃসরণ হয় 820 গ্রাম সেখানে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে CO2 নিঃসরণ হয় মাত্র 12 গ্রাম।পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কিভাবে অল্প খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় সেটাই বলার চেষ্টা করব আজকের এই ভিডিওতে।পৃথিবীর মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের বড় একটি অংশ আসে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে তাপশক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় এবং এই তাপশক্তি পাবার জন্য আমাদের পরিচিত জ্বালানি যেমনঃ তেল,গ্যাস,কয়লা ব্যবহার হয় ।অন্যদিকে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে তাপশক্তি পাবার জন্য ব্যবহার হয় ২৩৫ ভর সংখ্যা বিশিষ্ট ইউরেনিয়াম অর্থাৎ ইউরেনিয়াম 235 আইসোটোপ। ইউরেনিয়াম এর বিশেষত্ব হচ্ছে ইউরেনিয়াম পরমাণুকে যদি নিউট্রন দ্বারা আঘাত করা হয় তখন ইউরেনিয়াম পরমাণুর ভরসংখ্যা 235 থেকে 236 এ রূপান্তরিত হয় যারফলে ইউরেনিয়াম পরমাণু অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। অস্থিতিশীল ইউরেনিয়াম পরমাণুতে তখন চার ধরনের পরিবর্তন ঘটে। প্রথমত, ইউরেনিয়াম পরমাণুটি ভেঙে গিয়ে সম্পূর্ণ দুটি ভিন্ন মৌল কৃপ্টন এবং বেরিয়াম এ রূপান্তরিত হয়। দ্বিতীয়ত, তেজস্ক্রিয় রশ্মি নির্গত হয়। তৃতীয়ত, তাপশক্তি নির্গত হয় যার পরিমাণ 200 MeV এবং সর্বশেষ আরো তিনটি নিউট্রন নির্গত হয় নতুন করে নির্গত হওয়া এই তিনটি নিউট্রন তার আশেপাশে থাকা আরও তিনটি ইউরেনিয়াম পরমাণুকে আঘাত করে ফলে, একটি চেইন রিঅ্যাকশন এর সূচনা হয়, যাকে বলা হয় নিউক্লিয়ার ফিশন বিক্রিয়া। এইভাবে প্রতিটি পরমাণু ভাঙ্গার সাথেসাথে প্রাপ্ত 200MeV তাপশক্তিই মূলত প্রয়োজন বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য।
এটি হচ্ছে ইউরেনিয়াম বান্ডেল,পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি। খনি থেকে ইউরেনিয়াম আকরিক উত্তোলনের পর বেশকিছু জটিল রাসায়নিক প্রক্রিয়া খুবই সতর্কভাবে প্রয়োগ করে ইউরেনিয়াম বান্ডেল প্রস্তুত করা হয় ডায়াগ্রামটি লক্ষ্য করুন, এটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সামগ্রিক চিত্র। পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে মূলত চারটি অংশে থাকে.........